
ব্যবসা করা জন্য অবশ্যই আপনার মধ্যে কয়েকটি গুন থাকতেই হবে-
- সততা : ইংরেজি প্রবাদ ‘অনেস্টি ইজ দ্য বেস্ট পলিসি’র আদলে আমাদের দেশের অনেক ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ‘সততাই মূলধন’ লিখে টানিয়ে রাখা হয়। ফলে বাস্তব জীবনে লেনদেনে, কর্মক্ষেত্রে নিজের মধ্যে প্রয়োগের পরিবর্তে কেবল সাইনবোর্ডেই থাকে মহামূল্যবান বাণীটি। যদিও মানুষকে পরিমাপ করতে তার সততার মূল্যায়নের বিকল্প কোনো পদ্ধতি যে নেই, তা বোঝা যায় রেগে গিয়ে যখন মুখের ওপর বলে দেওয়া হয় লোকটা অসৎ। পৃথিবীতে অনেক ধরনের অপরাধ আছে; তবে সবগুলোর মাধ্যমে কিন্তু অন্যকে ঠকানো যায় না, যেমনটি অসততার মাধ্যমে যায়। একজন মানুষ অসৎ এর অর্থ হলো তিনি কোনো না কোনোভাবে মানুষকে ঠকানো বা ঠকানোর চেষ্টা করেন। ব্যবসার ক্ষেত্রে অসততা হলো গ্রাহকের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে বাড়তি অর্থ আদায়, খারাপ পণ্যকে ভালো বলে চালিয়ে দেওয়া অথবা ক্রেতার অগোচরে তাকে বাজে, পচা জিনিস দিয়ে দেওয়া। এর বাইরে পণ্যে ভেজাল মেশানো, ক্ষতিকর রাসায়নিক দিয়ে তাজা রাখা বা কাঁচা ফলফলাদি ক্ষতিকর রাসায়নিক মিশ্রিত করে পাকানো।
- পণ্যের মান নিশ্চিত করণ : একটা পণ্যের গুণগত মান পণ্যের উৎপাদক এবং ক্রেতা দুই পক্ষের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয়। ক্রেতা তার কাঙ্ক্ষিত মানের পণ্য পাচ্ছে কিনা সে বিষয়ে বরাবরই উদ্বিগ্ন থাকে। আর ব্যবসায়ীর চেষ্টা থাকে ক্রেতার এই উদ্বেগ নিরসন করার দিকে। পণ্যের কোয়ালিটি পরিকল্পনা মূলত পণ্যটি যাতে ক্রেতার সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারে সেটা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় কাজগুলোকে একটা কাঠামোর মধ্যে নিয়ে আসার একটা প্রক্রিয়া।এই কাজগুলোর সাথে সম্পৃক্ত সকলে যাতে তার কাজ সময়মতো শেষ করতে পারে সে জন্য তাদের মধ্যে আন্তঃযোগাযোগটাকে আরো কার্যকর করাই এই পরিকল্পনার মূল উদ্দেশ্য। আর কার্যকর পণ্য পরিকল্পনা নির্ভর করে ঐ প্রতিষ্ঠানের টপ ম্যানেজমেন্ট ক্রেতার সন্তুষ্টি অর্জনে কতটুকু আন্তরিক, বদ্ধপরিকর তার উপর। অনেক সময় পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ আর মানের নিশ্চয়তা একই অর্থে ব্যবহার করা হয়।তবে একটু সুনির্দিষ্ট করে বলতে গেলে পণ্যের গুণগত মান নিশ্চিত করতে হলে পণ্যের মানের সিস্টেমেটিক পরিমাপ,স্ট্যান্ডার্ডের সাথে উৎপাদিত পণ্যের মান মিলিয়ে দেখা এবং পুরো প্রক্রিয়াটা মনিটর করার ব্যবস্থা রাখতে হবে। গুণগত মান নিশ্চিতকরণে দুটি নীতি খুব মনোযোগের সাথে পালন করতে হয়। একটি হলো “ফিট ফর পারপাস”, মানে যে উদ্দেশ্যে পণ্য উৎপাদন করা হচ্ছে উৎপাদিত পণ্যের মান সেই উদ্দেশ্য সাধন করবে। আর দ্বিতীয়টি হলো “রাইট ফার্স্ট টাইম”, মানে পণ্য উৎপাদনের সময় প্রথমবারেই যাতে সুনির্দিষ্ট স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী পণ্যের মান বজায় রাখা যায় সে জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া। কারণ দ্বিতীয়বার কোনো পরিবর্তন আনতে গেলে অতিরিক্ত খরচ হবে যা পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেবে।
- মাকের্টিং দক্ষতা : বর্তমান প্রতিযোগীতার বাজারে ব্যবসায় বানিজ্য আগের থেকে অনেক বেশী কঠিন। যদিও বা তথ্য প্রযুক্তির যুগে এসে কিছু বাড়তি সুবিধা পাচ্ছে ব্যবসায়ীরা। আর নতুন করে যারা ব্যবসায়ে আসতে চাইছেন তাদের ক্ষেত্রে আগের থেকে অধিক ঝুঁকি বহন করতে হচ্ছে। তবে ব্যবসা বানিজ্যের পরিধি বাড়ার সাথে সাথে নতুন নতুন সুযোগের দুয়ারও খুলছে প্রতিনিয়ত। সেই সাথে কৌশলগত দিকগুলোতে নিয়মিত একটু নজর দিতে পারলে ব্যবসায়ে সফলতা খুব কঠিন কিছু নয়। পন্য বা সেবা বিক্রয়ের মাধ্যমে কোন একটি ব্যবসায়ের আয় আসে। আর এই আয়কে নিয়মিত করতে সঠিক উপায়ে দক্ষতার সাথে মার্কেটিং করতে হয়। এজন্য কোন একটি প্রতিষ্ঠানের সর্বোচ্চ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগটি হয় সেলস এন্ড মার্কেটিং। কারন আয়ের উপরেই কোন একটি ব্যবসায়ের ভাগ্য নির্ধারিত হয়। আর আয় না থাকলে সে ব্যবসায়টি মুখ থুবরে পড়তে খুব বেশী সময় লাগে না। সঠিক পন্থায় দক্ষতার সাথে মার্কেটিং পরিচালনা করতে পারলেই আয়ের সঞ্চালন নিয়মিত হয়।
- ডেলিভারি সিস্টেম : আপনার ব্যবসাকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে আপনাকে অবশ্যই সঠিক সময় ডেলিভারি দিতে হবে। এজন্য আপনাকে সব সময় ডেলিভারি ম্যানের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে। যাতে কাস্টমার সঠিক সময়ে তার পন্য সংগ্রহ করতে পারে।